শিশু কিশোরদের মনোবিকাশে খেলার মাঠ জরুরী

দৈনিক সিলেট ডট কম

নওরোজ জাহান মারুফ
নওরোজ জাহান মারুফ: ইদানিং আমি একটি বিষয় নিয়ে মনে মনে ভীষণ ভাবে চিন্তা করছি আর ভাবছি যে, এই সিলেট শহরে এতো মানুষ বাস করে এবং প্রায় প্রতিদিনই দেখা যায় গ্রামগঞ্জ থেকে শহরমুখী মানুষের ঢল ক্রমাগত বাড়ছেই। রাস্তায় বেরুলে বিস্ময় জাগে মনে-মানুষের সংখ্যা দেখে। আপনি অবাক হয়েই লক্ষ করবেন ক্রমান্বয়ে এইসব নব্য শহুরে মানুষের আনাগোনা, দৌঁড়ঝাপ ও চলাফেরা দেখে। কখনও মনে হয় ধারণ ক্ষমতার চেয়েও বেশী মানুষ বোধহয় বাস করছে এই নগরে। এ দিকে রাস্তাঘাটের যে করুণ অবস্থা এই সিলেট শহরে তা দেখে মনে হয় যেন রাস্তা ছেড়ে পালাই প্রাণটি বাঁচাই। এই নগরের রাস্তাঘাট যে কি পরিমাণ ভেঙ্গেছে তা এ সিলেট নগরীর লোক ছাড়া অন্য কেউই ঠের পাবে না। এত জখম রাস্তাঘাটের তা কাউকে বলে কয়ে বুঝানো যাবেনা। খোদ শহরের বুকে এমন কোন রাস্তা নেই যেটা ভাঙ্গা নেই। ভাঙ্গাচোরা রাস্তার ইতিপূর্বের সব রেকর্ড যেন ম্লান হয়ে গেছে বর্তমানের কাছে। ভাঙ্গাচোরা রাস্তায় পড়ে প্রতিনিয়ত রিক্সা, মটরসাইকেল, কার, মাইক্রোবাসসহ সব ধরণের যানবাহন অহরহ বিকল হচ্ছে। যানজটের নগরী সিলেট আরো তীব্র যানজটের মুখে পতিত হয়ে প্রতিটি রাস্তায় ভাঙ্গায় পড়ে যান বিকল হয়ে। এইসব দেখার যেন কেউ নেই এ নগরে! কি অদ্ভুত ব্যাপার! কর্তৃপক্ষ একটা আছে সিলেটে রাস্তায় বেরুলে মনেই হয় না। অনেক পথচারী বলেন এমন ভাঙ্গাচোরা রাস্তা, আর যানজট সিলেট শহরের বুকে জীবনেও দেখেন নাই। এই অবস্থায়ও মানুষ বাস করছে এই শহরে। কোন উপায় যে নাই মানুষের। এইসব মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে অনেক সচেতন নাগরিকই চিন্তিত। নতুন প্রজন্মের মনোবিকাশ ঘটবে কি করে? এমন যদি হয় নগরের পরিবেশ! সাধারণত মানুষকে সমাজে বাস করতে হলে, বাঁচতে হলে কিছু মৌলিক জিনিসের প্রয়োজন পড়ে। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ছাড়াও সুস্থভাবে বাঁচতে হলে নাগরিকের বিশেষভাবে প্রয়োজন খেলাধুলা করা, শরীরচর্চা করা আর হাটাহাঁটি করা ইত্যাদি। কিন্তু হাটবার কোন সুযোগ আছে কি এই শহরে? রাস্তাঘাট ভাঙ্গাচোরা ছাড়াও ফুটপাত যাও আছে তা হকারদের দখলে। মাঠ নেই, ঘাট নেই, পার্ক নেই তাহলে কিভাবে এ শহরের মানুষ সুস্থভাবে বাঁচবে? লক্ষ্য করলে দেখা যায় প্রতিনিয়ত সু-উচ্চ ভবন তালগাছের মত উপরের দিকে উঠছে এ শহরে। কোথাও একটু খালি জায়গা পাবার উপায় নেই এখানে। প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা হওয়াতে যাও একটু আদটু খালি জমি ছিল তাতেও হাইরাইজ বিল্ডিং বানানো হচ্ছে তড়িগড়ি করে। হরদম চোঁখে পড়ে বহুতলা ভবন বানানোর দৃশ্য। প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিবার সুযোগ দিনে দিনে কমে যাচ্ছে এই নগরের নাগরিকের। বড় কঠিন হয়ে গেছে জীবন বাঁচানো- এটাই এখন কঠিন বাস্তবতা। বাস্তব অভিজ্ঞতা হল সারা সিলেট খুঁজে ২/৩টি খেলার মাঠ খোঁজে পাওয়া যাবে না, দিঘী, পুকুর পাওয়া যাবে না। তাহলে এ শহরের ছেলেপুলেরা কোথায় যাবে। ন্যূনতম নাগরিক সুবিধা বলতে খেলার মাঠ, সাঁতার শিখার ব্যবস্থা, মুক্তমনে চলাফেরা ইত্যাদি কোনটির দেখা মেলে না বিভাগীয় এই সিলেট শহরে। ইদানিং প্রাইভেটলি কিছু সুইমিং পুল ব্যবসার উদ্দেশ্যে বানানো হয়েছে বড় বড় সুউচ্চ বিল্ডিং’এ যেটা সাধারণের জন্য প্রায় দুঃপ্রাপ্য। নগরায়নের কারণে শুধু বড় বড় স্থাপনাই হচ্ছে কিন্তু বিনোদনের তেমন সুযোগ নাই সাধারণ নাগরিকের। গাছগাছালি কেঁটে, মাঠ ঘাট ভরাট করে শুধু স্থাপনাই হচ্ছে সর্ব সাধারণের চিত্ত বিনোদনের কেউ ধার ধারে না। এ শহরে চারিদিকে ধুলাবালি আর যানবাহনের ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন থাকে পথঘাট সারাবেলা। মুক্তমনে হাটারও সুযোগ নেই এখানে। ধুলিকণা সর্বদাই মানুষের নিঃশ্বাসের সাথে ভিতরে ঢুকছে এবং ক্রমাগতই মানুষ অসুস্থ হচ্ছে আর হাসপাতালে দৌঁড়াচ্ছে। বায়ু দূষণ, শব্দ দূষণ, সিলেটে চরম পর্যায়ে চলে গেছে। এ নিয়ে ভাবতে হবে এখনই নইলে ঘটবে বিপত্তি। কিন্তু কে ভাববে, কর্তৃপক্ষ যে নির্বিকার। ভাবনার বিষয়, এত সমস্যা এই নগরে কিন্তু তার সমাধানের কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়না, কেন? জনগণের প্রতিনিয়ত এই প্রশ্ন। শহরের বুকে রাস্তা বড় করা হচ্ছে-হরদম কাজ চলছে ভাঙ্গা হচ্ছে দেয়াল, গেইট, স্থাপনা ইত্যাদি। তৈরী হচ্ছে নতুন ড্রেন, ফুটপাত- ভালো কথা রাস্তা বড় না হলে চলবে না এ শহরে, কিন্তু জনগণ বা পথচারীদের কষ্ট দিয়ে কেন? তাও মানলাম। কিন্তু উপর্য্যপুরি বৃষ্টির কারণে আর ভারী যান চলাচলের কারণেই হোক প্রায় সব রাস্তার এমন দশাসই অবস্থায় মানুষের জীবন বিপন্ন হচ্ছে এটা কেন কর্তৃপক্ষ দেখে না। মেরামত না করে করে চলার অনুপযোগী শহরের রাস্তাগুলি। কর্তৃপক্ষ যদি মনে করেন সব রাস্তা বড় করে এক সাথে রাস্তা মেরামত করবেন- তাহলে সেটা ভুল করবেন। বিরাট ভুল। জরুরী ভিত্তিতে রাস্তার রিপিয়ারিং দরকার। পরে না হয় শক্তভাবে এক সাথে করবেন। আপাতত নগরবাসীকে বাঁচাতে হবে- খাদাখন্দকে পড়ে পথচারীর প্রাণ যায় যায় অবস্থা থেকে বাঁচাতে হবে। সুস্থ সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে সরকারের পাশাপাশি জনগনকেও আগাইয়া আসতে হবে। আসতে হবে রাজনৈতিক দলগুলিকেও। সব দিক সরকারকে একা সামলানো সম্ভব নয়। কাজ করতে হবে সরকারের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে- নইলে যে তিমিরে ছিলাম সে তিমিরেই রয়ে যাবো আমরা নগরবাসী। আগামী প্রজন্মকে নিয়ে আমরা যে স্বপ্ন দেখি সেই সব স্বপ্ন, সব আশা ধুলায় মিশে যাবে। ক্রমশ্য শিক্ষিতের হার বাড়ছে অবশ্যই। তাই আর দেরী নয় নতুন প্রজন্ম বা তরুণ সমাজকে নিয়ে ভাবতে হবে এখনই। তরুণ সমাজের শিক্ষাদিক্ষায় যেভাবে আশান্বিত হচ্ছি আমরা সেইভাবে তাদের সুস্বাস্থ্যেরও অধিকারী বানাতে হবে। সুন্দর সমাজ গঠনে তরুণদের ছাড়া সম্ভব নয়। দেশ গড়তেও এখন নতুন প্রজন্ম তথা তরুণ সমাজকে আগাইয়া আনতে হবে। একবিংশ শতাব্দিতে তরুণদের চিন্তা চেতনাই আলাদা। তাদের সহায়তা দিতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশকে পুর্ণাঙ্গ রূপ দিতে তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণ জরুরী।
এ প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা এখন প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হয়না। সবাই এখন ডিজিটাল হয়ে গেছে। সবার ঘরে ইন্টারনেট। ইন্টারনেটের সুবাদে ছেলে-মেয়েরা দিনরাত অনলাইনে ডুবে থাকে। তারা নাওয়া-খাওয়া ভুলে গিয়ে নামীদামী মোবাইল নিয়ে সারাক্ষণ মেতে উঠে। বেশিরভাগ বাচ্চারা এখন সময় কাটায় অনলাইনে আর যারা বাইরে বেরুয় তারা বাজে আড্ডায় মেতে থাকে। শুধু ছেলে-মেয়েদের দোষ দিলে হবে না- অভিভাবকদেরও দোষ অনেক আছে। আমরা অভিভাবকরাইতো সুযোগ দিচ্ছি ছেলেমেয়েদের এমনটা হতে- কারণ আমরা সাত পাঁচ না ভেবে দামী দামী আইফোন, স্মার্টফোন, গাদা গাদা টাকা ইত্যাদি তুলে দিচ্ছি সন্তানদের হাতে। যেমন বাইরে বেরুলে ছেলে-মেয়েরা কি করছে খবর নেওয়া যাচ্ছে না তেমনি ঘরে থাকলেও খবর নেওয়া হয় না তারা সারাক্ষণ কি করে। মনে করা হয় ছেলে আমার ঘরেই আছে। কিন্তু সর্বনাশা ইন্টারনেটের বদৌলতে ঘরে বসেও যে ছেলে-মেয়েরা বখে যাচ্ছে সে খবর আমরা কয়জনেই বা রাখি। অনলাইনের যুগে কুকীর্তিরও যে সীমা নেই তা বুঝাই কেমনে? হরদম ছেলেমেয়েরা বাজে ছবি, পর্ণ ইত্যাদি দেখছে ইন্টারনেটের সুবাদে অনলাইনের কল্যাণে মোবাইলে বা কম্পিউটারে। ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়াতে যেমন সুফল পাওয়া গেছে তার বিপরীতে কুফলও আছে বেশ। ছেলে-মেয়েরা এসবে আসক্ত হয়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে। এমনটা বন্ধ করতে না পারলে মেধাবী জাতি আর বলা যাবে না। আর কারোও ঘরে সীমিত সুযোগ সুবিধার কারণে বাইরে যারা যায় তারাও অনেকে বখাটেপনায় মত্ত। আমি ডালাও ভাবে সব ছেলে-মেয়ের কথা বলছি না, যাদের পরিবারে কড়া নজরদারীতে রাখা হয় ছেলে-মেয়েদের তাদের কথা আলাদা। আমরা কথায় কথায় ডিজিটাল শব্দ ব্যবহার করি। বলি দেশ আজ ডিজিটাল হয়ে গেছে প্রযুক্তির এ যুগে। কিন্তু এই ডিজিটালের দোহাই দিয়েই পার পাওয়া মুশকিল। খেয়াল রাখতে হবে এখন যত ডিজিটাল তত অপকর্ম। আগের জমানায় আমরা বাইরে গিয়ে খেলতাম, বাইরে বড় বড় খেলার মাঠ ছিল, খেলাধুলার জায়গা ছিল, স্কুলের বিশাল আঙ্গিনা ছিল। বড় বড় বাড়ীতে বিশাল বিশাল আঙ্গিনা, উঠোন ছিল। হাডুডু (কাবাডি), ব্যাডমিন্টন, ফুটবল ইত্যাদিই ছিল মেইন। স্কুল পড়–য়া ছেলেপুলে ছাড়াও পাড়ায় পাড়ায় থাকতো তরুণদের জন্য খেলার ব্যবস্থা, থাকতো পাঠাগার। ক্লাবের ছাত্র-ছাত্রীরা সগৌরবে সেখানে যাতায়াতের সুযোগ পেতো। প্রসঙ্গক্রমে বলে নিই, ইদানিং কোলের শিশুরাও স্কুলে যায় বটে। তারা ভর্তি হয় প্লে-ক্লাসে। প্লে করার সুবাদে তাদের পড়ালেখাতে হাতেখড়ি করা হয় কিন্তু অধিকাংশ প্লে-স্কুলে প্লে করার সুযোগ সীমিত। বাচ্চাদের কিন্ডারগার্ডেন স্কুলগুলোতে অধিকাংশেরই পর্যাপ্ত ক্লাস করার ব্যবস্থা নেই। গাদাগাদি করে সীমিত পরিসরে প্রায় স্কুলই গড়ে উঠেছে। সেখানে প্লে করার উপযুক্ত যায়গাই নেই বাচ্চাদের। তারপরও বাধ্য হয়েই অভিভাবকরা বাচ্চাদের কিন্ডারগার্ডেন স্কুলে পাঠান নইলে যে বাচ্চা সে সুযোগও হারাবে। এখন কোন অবস্থাসম্পন্ন ঘরের ছেলে-মেয়েরা সরকারী প্রাথমিক স্কুলে যায়না। এখন কিন্ডারগার্ডেন স্কুলই মুখ্য। গার্জেনরা ভাবে তাদের সন্তানেরা কিন্ডারগার্ডেনে না গেলে পিঁছে পড়ে যাবে। কিন্ডারগার্ডেনই ভালো। তবে সব কিন্ডারগার্ডেনই গুণে-মানে এক নয়, পড়ার মান থাকতে হবে। শুধু বইয়ের বোঝা পিঠে নিলেই বাচ্চারা শিক্ষিত বা মেধাবী হবে এ ভাবনা অমূলক। কোমলমতী শিশুরা বই-খাতার বোঝা পিঠে নিয়ে শুধু নয় ওগুলোর বাড়তি পড়ার চাপে পড়ে হীতে বিপরীত ঘটে। ছিটকে পড়ে শিশুরা বেশী চাপ সহ্য করতে না পেরে। এসব বিষয় আমলে নিতে হবে গার্জেনদের এবং সব শিক্ষকদের। আগের জমানায় প্রজন্মের পর প্রজন্মই সরকারী স্কুল থেকেই পড়াশুনা করে মেধার সাক্ষর রেখেছেন। যুগ বদলে গেছে বুঝলাম কিন্তু এসব স্কুলগুলোতে পড়ার মান বদলায়নি কেন এখনও? কিন্ডারগার্ডেন আর সরকারী স্কুলের পড়ার মাঝে রাজ্যের ব্যবধান।
অবশ্য সরকারের কঠিন সিদ্ধান্তের কারণে আজকাল ধনী-গরীব কোন বাচ্চারা ঘরে বসে থাকেনা- সবাই স্কুলে যায় এখন। প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর সরকার গুরুদায়িত্ব বেঁধে দিয়েছেন কোন ছাত্র-ছাত্রী কয়েকদিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলে তাদের বাসা-বাড়ীতে গিয়ে খোঁজ নিতে হবে কি কারণে ছাত্র স্কুলে আসছে না। এ কারণে ঝরে পড়া ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা বর্তমানে অনেক কম। জাতিকে শিক্ষিত করে তুলতে সরকারের এ পরিকল্পনা প্রশংসার দাবি রাখে। ফিরে আসি মূল প্রসঙ্গে- আমার লেখার বিষয় শিশু-কিশোরদের মনোবিকাশ কেমনে বাড়ানো যায়। বাংলাদেশে সাম্প্রতিককালে যেভাবে জনসংখ্যা বাড়ছে ঠিক সে তুলনায় জনগণের সুযোগ-সুবিধা বাড়ে নাই। দেশে উন্নয়ন বলতে শুধু চোখে পড়ে বড় বড় বিল্ডিং, মার্কেট আর টাওয়ার (অন্যান্য উন্নয়ন চোখে পড়ে না, তাই সহজে সেগুলো সামনে আসে না)। এর বাইরে যে কত কাজ উন্নয়নের বাকি সে বিষয়ে তেমন আগ্রহ অনেকের নাই। বলছিলাম বাচ্চাদের খেলার মাঠ নেই প্রসঙ্গ নিয়ে। আগে বাচ্চারা রাস্তায় গিয়েও খেলতো এখন রাস্তা পথচারীর জন্যও যথেষ্ট নয়। বাসাবাড়ীর আঙ্গিনাতো নাই-ই। মুক্তভাবে খেলাধুলা করা বাচ্চাদের মনো-বিকাশ অন্যতম সহায়ক। বিগত সরকারের আমলে হরতাল ছিল নিত্যদিনের কর্মসূচী- দেখতাম তখন ছেলেপুলেরা রাস্তায় বেট-বল ষ্ট্যাম্প নিয়ে ক্রিকেট খেলতো, তাদের জন্য হরতাল আনন্দের ছিল বটে তবে আলহামদুলিল্লাহ অপয়া এই হরতাল নামক ভূতটি আমাদের ঘাড় থেকে নেমেছে। অবশ্য এখনই এটা বলার দিন আসেনি, ভবিষ্যত পানে তাই চেয়ে রইলাম।
আমি আমার লেখনি শেষ করতে চাই এই বলে যে, সরকারসহ সব রাজনৈতিক দলগুলোকে সব নাগরিককে সাথে নিয়ে আগামী প্রজন্মের সুস্বাস্থ্যের কথা ভাবতে হবে এখনই জরুরী ভিত্তিতে। নইলে বিপাকে পড়তে হবে। বিপত্তি সামাল দেয়া যাবে না। কারণ লেংড়া, কানা, লোলা, বোবা বদির হয়ে জন্মালে আগামীর সম্ভাবনা থমকে যাবে। শিক্ষিত জাতি যেভাবে আশা করা হয় ঠিক সেইভাবে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী জনগোষ্ঠী তৈরী করতে হবে, তবেই আগামী প্রজন্ম ঝলমল করে উঠবে। আগামী প্রজন্মের দিকেই তো সবার দৃষ্টি দিতে হবে, এরাইতো আগামীর ভবিষ্যৎ। এ প্রজন্মকে শান দিয়ে তৈরী করতে হবে, তাদের শিক্ষা-দিক্ষার পাশাপাশি সু-স্বাস্থ্যের অধিকারী করে বানাতে হবেই। খেলাধুলায় পারদর্শী একটা জাতি গোটা জাতির জন্যও সম্মান বয়ে নিয়ে আসে। সাতারও একটা ব্যায়াম। শরীর, মন ঘটনে সাঁতারেরও জুড়ি নাই। বিশ্বব্যাপী সাঁতার খুবই জনপ্রিয় ও শরীর চর্চার অন্যতম মাধ্যম। সরকারী, বেসরকারীভাবে আরও বেশী সাঁতার শেখার প্রশিক্ষণ বা সুইমিংপুলের ব্যবস্থা করতে পারলে এ প্রজন্ম দক্ষ সাঁতারু হয়ে বিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম বয়ে আনবে। আমাদের দেশের ছেলেদের পাশাপাশি অনেক মেয়েরা আছে যারা অলিম্পিক সহ বিশ্ব সাতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে স্বর্ণ, রোপ্য ও ব্রোঞ্জ জয়ী হয়েছে। আগামী প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের সুস্বাস্থ্য ও মনোবিকাশ নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে, তবেই সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ আশা করা যায়।