ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১৬৭৩
দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু চলতি বছর বিশ্বের ৭৯টি দেশে ছড়িয়েছে। তবে মৃত্যুর দিক দিয়ে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বে এ পর্যন্ত ৪২ লাখ মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন; মারা গেছেন ৩ হাজারের বেশি। এ হিসাবে মৃতদের ৩৭ শতাংশই বাংলাদেশের।
দেশে এ বছর ডেঙ্গু নিয়ে ২ লাখ ৩৫ হাজার ২০৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ১ হাজার ১৪৮ জন। আর অক্টোবরের ১৩ দিনেই মারা গেছেন ১৫৯ জন।
ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (ইসিডিসি) ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। ইসিডিসি তাদের ওয়েবসাইটে গত ২ অক্টোবর সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু সংক্রমণ হয়েছে– এমন ১০টি দেশের তালিকা দিয়েছে। এতে আক্রান্তে তৃতীয় বাংলাদেশ। শীর্ষে ব্রাজিল ও পেরু। বাংলাদেশের পরে রয়েছে যথাক্রমে বলিভিয়া, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো, নিকারাগুয়া, কলম্বিয়া, ভারত ও ফিলিপাইন।
জনস্বাস্থ্যবিদ, কীটতত্ত্ববিদ ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং সিটি করপোরেশন এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে সঠিক সময়ে কাজ করেনি। তাদের গাফিলতিতে ডেঙ্গু সব জেলায় ছড়িয়েছে। ঢাকার বাইরে এখন ডেঙ্গু রোগী দ্বিগুণের বেশি। আবহাওয়া বিবেচনায় আরও কয়েক মাস ডেঙ্গু থাকতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এ বছর যে মাসে বৃষ্টিপাত বেশি ছিল, সে মাসেই ডেঙ্গুর সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর সিলেট ও চট্টগ্রামে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেশি।
আজ শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৮ জন ঢাকার। এ সময় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৬৭৩ জন। তাদের মধ্যে ঢাকা সিটির ৪৭৮ ও ঢাকার বাইরের ১ হাজার ১৯৫ জন। বর্তমানে সারাদেশের হাসপাতালে ৮ হাজার ২৪৮ রোগী চিকিৎসাধীন।
চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তিদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ লাখ ২৫ হাজার ৮০৮ জন। গত বছর ডেঙ্গুতে সারাদেশের হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন; মারা যান ২৮১ জন।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন বলেন, গত বছর অক্টোবরে সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি ছিল। এ বছরও একই শঙ্কা রয়েছে। কারণ থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এখনকার আবহাওয়া এডিসের বংশবিস্তারের জন্য উপযুক্ত। উৎপত্তিস্থল ধ্বংস ছাড়া মশা কমবে না।
আইইডিসিআরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা বলেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এবং মৃত্যু বাড়ছে। কেন বাড়ছে, প্রকৃত কারণ সন্ধান জরুরি। মৃত্যুর কারণ তাৎক্ষণিকভাবে পর্যালোচনা করতে পারলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া যেত।