২৩ বছর পর পূর্ণাঙ্গ হচ্ছে সিলেট যুবদলের কমিটি

দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
এক বছর পর জমা দেয়া হচ্ছে সিলেট যুবদলের দুই পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা। আজকালের মধ্যে কেন্দ্রীয় নেতাদের হাতে ১৯১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির তালিকা জমা দেয়া হবে। তালিকা জমা দিতে ঢাকায় অবস্থান করছেন সিলেট জেলা ও মহানগর যুবদলের ৪ নেতা। গতকাল জমা দেয়ার আগে শেষবারের মতো তারা কমিটি দুটো নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন।
যুবদল নেতারা জানিয়েছেন, প্রায় ২৩ বছর পর পূর্ণাঙ্গ হচ্ছে সিলেট জেলা ও মহানগর যুবদলের কমিটি। ফলে এবারের কমিটিতে যারা আসছেন তারা সবাই নতুন মুখ। আহ্বায়ক কমিটির অনেক নেতাকে দেখা যাবে কমিটিতে। আন্দোলনে যারা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছেন; তাদেরকেও রাখা হচ্ছে কমিটিতে। ১৯ বছরের অপেক্ষার পর বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরের হস্তক্ষেপে ২০১৯ সালের ১লা নভেম্বর সিলেট জেলা ও মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
সম্পূর্ণ নতুন ফরম্যাটে গঠন করা হয় এই দুই কমিটি। পুরাতনদের মধ্যে কেবল ছিলেন নগর আহ্বায়ক নজিবুর রহমান নজিব। বাকি সবাই ছিলেন নতুন।
ফলে আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে সিলেটে প্রথমদিকে কিছুটা মান অভিমান থাকলেও পরে তা স্বাভাবিক হয়ে যায়। যুবদলের সাবেক নেতারা অভিমান ভুলে বিএনপিতে স্থিত হয়েছেন। আহ্বায়ক কমিটি গঠন হলেও সম্মেলন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। করোনা, বন্যায় পিছিয়ে যায় সে প্রক্রিয়া। অবশেষে গত বছরের ১০ই সেপ্টেম্বর হয় জেলার ও ১১ই সেপ্টেম্বর মহানগর যুবদলের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে জেলার সভাপতি হন এডভোকেট মুমিনুল ইসলাম মুমিন, সাধারণ সম্পাদক হন মকসুদ আহমদ। আর নগর যুবদলের সভাপতি হন শাহ নেওয়াজ বক্ত তারেক ও সাধারণ সম্পাদক মীর্জা সম্রাট। সম্মেলনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিতরা এক বছর পর কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার কাজ শুরু করেন। বিলম্বে কমিটি দেয়ার কারণ হিসেবে নেতারা বলেন, আন্দোলন কর্মসূচি পালন, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা কারণে তারা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেননি। এখন কেন্দ্রের অনুমতি নিয়ে সেই প্রক্রিয়া শেষ করে দুটি কমিটিই জমা দেয়া হচ্ছে।
আজই জমা হতে পারে পূর্ণাঙ্গ দুটি কমিটি। জমার পর কেন্দ্রীয় নেতারা এ নিয়ে বসবেন যাচাই-বাছাইয়ের পর সিদ্বান্ত নিয়ে কমিটি প্রকাশ করবেন। তবে- যে কমিটি জমা দেয়া হচ্ছে; সেখানে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের ঠাই হচ্ছে বলে জানান নেতারা। তারা জানিয়েছেন, দলের এখন দু:সময়। এই মূহূর্তে কোনো রাজনীতি নয়। গ্রুপ, উপগ্রুপ না ভেবে যারা দলের জন্য মাঠে কাজ করবে এবং আন্দোলনে ভূমিকা রাখবে তাদেরকেই কমিটিকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে সাবেক ছাত্রদল নেতারা প্রাধান্য পাচ্ছেন বেশি। মুখ দেখে কাউকে পদ-পদবি দেয়া হচ্ছে না।
সিলেট জেলা যুবদলের সভাপতি এডভোকেট মুমিনুল ইসলাম মুমিন ও সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদ জানান, কমিটি চূড়ান্ত করার আগে এ নিয়ে নানা তরফে আলোচনা হয়েছে। আমরা ১৯১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি জমা দিচ্ছি। আজকালের মধ্যে কেন্দ্রের কাছে এ কমিটি জমা পড়বে। তারা বলেন, জেলা যুবদলের অধিভুক্ত ১৮ ইউনিটের নেতা, সাবেক ছাত্রদল নেতা এবং বিগত আহ্বায়ক কমিটিতে যারা ছিলেন তারা কমিটিতে ঠাঁই পেয়েছেন। আর অবশ্যই রাজপথে পরীক্ষিত নেতাদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। তারা মনে করেন, সিলেট জেলা যুবদলের কমিটির মেয়াদ এক বছর চলে গেছে। এখন আর বেশি সময় নেয়া হবে না। শিগগিরই জেলা বিএনপি’র পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে।
সিলেট নগর যুবদলের সভাপতি শাহনেওয়াজ বক্ত তারেক ও সাধারণ সম্পাদক মীর্জা সম্রাট জানিয়েছেন, সিলেট নগরীর ৪২টি ওয়ার্ড হচ্ছে নগর যুবদলের ইউনিট। এর মধ্যে ২৭ ওয়ার্ড আগে থেকেই ছিল। নতুন যেসব ওয়ার্ড হয়েছে সেগুলোতে এখন সাজানোর কাজ করছে বিএনপি’র নেতারা। তাদের কার্যক্রম শেষ হলে আমরা কাজ শুরু করবো। এরপর একে একে ঘোষণা করা হবে নতুন ওয়ার্ডে কমিটি গঠন প্রক্রিয়া। তারা জানান, নগর যুবদলের এবারের কমিটিতে পূর্বের ২৭ ওয়ার্ড এবং নতুন ওয়ার্ডগুলোর যারা সাবেক নেতা ছিলেন তাদেরকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। এর বাইরে ছাত্রদল থেকে আসা নেতারাও সুযোগ পাচ্ছে। আমাদের টার্গেট হচ্ছে সিলেট যুবদলকে কার্যকর করা, আন্দোলনে বেগবান করা। সেজন্য আমরা রাজপথের সৈনিকদের প্রাধান্য দিয়েছি।