মধুচন্দ্রিমার জন্য অদ্ভুত যত হোটেল
দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
শীতকাল মানেই বিয়ের মৌসুম। ভ্রমণের জন্যও শীতকালই সেরা সময়। বিয়ের পর মধুচন্দ্রিমা বা হানিমুন প্রতিটি নবদম্পতির কাছে এক প্রকার স্বপ্নের মতো। তাও যদি হয় আবার বিদেশ ভ্রমণ। প্রিয় মানুষটির সঙ্গে একান্ত কিছু সুন্দর সময় কাটাতে খোঁজ করেন এমন একটি জায়গার, যেখানে থাকবে রোমাঞ্চকর পরিবেশ, আরামদায়ক ব্যবস্থা, নিরাপত্তা ও মনোরম-সুন্দর প্রকৃতির সান্নিধ্য। অনেকে আবার খোঁজ করেন অ্যাডভেঞ্চরও। সে ভাবনা থেকেই বিশ্বে এমন কিছু হোটেল তৈরি করা হয়েছে, যা সাধারণ মানুষের ভাবনার অনেক ঊর্ধ্বে!
অদ্ভুত এই পৃথিবীতে ভিন্ন চিন্তাধারার হাজারো মানুষ তাদের নিজস্ব ভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে জীবনযাপন করে। কখনো কখনো কিছু মানুষের চিন্তাধারা ও কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষের চোখে উদ্ভট লাগে! সেই চিন্তা থেকেই বানানো হয়েছে ভিন্নধর্মী এসব হোটেল। যার শীর্ষে রয়েছে-
হোটেল কভেভরেবি জর্জিয়া অনেকেই এটিকে মাটির কলসি ভেবে ভুল করবেন। হোটলটি দেখতে একদম মাটির কলসির মতো। বাইরে থেকে দেখতে এটি নরমাল মনে হলেও ভেতরের দৃশ্য কোনো ফাইভ স্টার হোটেলের চেয়ে কম নয়। হোটেলটি জর্জিয়ার তেলাভিতে অবস্থিত। ২০২৩ সাল হোটেল শুরু হলেও ইতোমধ্যে এইটি অনন্য স্থান দখল করেছে শুধু তার বাহ্যিক অবকাঠামোর জন্য। হোটেলটিতে ২০টি কলস এবং ১৭টি নরমাল অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। প্রতিটি কলসি এক একটি ছোট ঘর। যেখানে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। এখানে একদিনের জন্য আপনাকে দিতে হবে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। আপনি যদি মধুচন্দ্রিমার জন্য একটি শান্ত- মনোরম পরিবেশ ও নির্জন জায়গা চান তবে এটা উপযুক্ত স্থান।
হোটেল ভি-৮, জার্মানি বিশ্বজুড়ে গাড়িপ্রেমীদের জন্য এই হোটেলটি এক আদর্শ জায়গা। জার্মানিতে অবস্থিত এই হোটেলটি দেখে চমকে উঠতে বাধ্য হবেন আপনি। এই হোটেলের প্রত্যেকটি রুম বিশ্বের বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ডের কারের আদলে ডিজাইন করা হয়েছে। এমনকি এই হোটেলের বিছানা ও আসবাবপত্রগুলোও কারের আদলে বিশেষভাবে ডিজাইন করা।
জাপানের ক্যাপসুলভ ভ্যালু কান্ডা জাপানে অবস্থিত ক্যাপস্যুলভ ভ্যালু কান্ডা নিজেই এক আশ্চর্য। এই হোটেলে রাত্রিযাপনের জন্য আপনার জন্য বরাদ্ধ থাকবে ৭ থেকে ৮ ফুট সাইজের একটি ক্যাপসুল রুম। গোটা জাপানজুড়ে এরকম আরও বেশ কয়েকটি ক্যাপসুল হোটেল রয়েছে। একেকটি ক্যাপসুল হোটেলে প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০টি ক্যাপসুল রুম থাকে। এই হোটেলে প্রত্যেক ফ্লোরে আলাদা করে ওয়াশরুম রয়েছে এবং পর্যটকদের জিনিসপত্র রাখার জন্য প্রথম ফ্লোরে আছে একটি লকার। এই ছোট্ট ক্যাপসুল রুমের মধ্যেই টিভি, রেডিও, ওয়াফাই, এসি সহ আদর্শ হোটেলরুমের মতো মোটামুটি প্রায় সব সুবিধাই বিদ্যমান।
ফিজির পোসাইডোন আন্ডার-সি রিসোর্ট ফিজিতে অবস্থিত এই হোটেলটি সমুদ্রের তলদেশে বানানো একটি ফাইভ স্টার মানের হোটেল। পোসাইডোন আন্ডার-সি রিসোর্ট সমুদ্রের তলদেশে বানানো পৃথিবীর সর্বপ্রথম একমাত্র ফাইভ স্টার মানের হোটেল। এই হোটেলটি বিয়ে, জন্মদিনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়ে থাকে। আপনি যদি সমুদ্রের নিচে প্রিয়জনের সাথে একটু ভালো সময় কাটানোর স্বপ্নে বিভোর হয়ে থাকেন তাহলে এই হোটেলটি হবে আপনার জন্য শ্রেষ্ঠ গন্তব্য।
সুইডেনের জুক্কাসজার্ভি আইস হোটেল সুইডেনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থানগুলোর একটি হলো জুক্কাসজার্ভির এই আইস হোটেল। এটি ১৯৯০ সাল থেকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছিল। স্থানীয় একটি লেকের জমে থাকা বরফ কেটে নান্দনিক ডিজাইনে বানানো এই হোটেলটি পৃথিবীজুড়ে এক আশ্চর্যের নাম। এই হোটেলের প্রত্যেকটি জিনিস বরফের তৈরি। এখানে ৫০টির উপরে রুম এবং ভোজনবিলাসীদের জন্য একটি রেস্টুরেন্টও আছে। জুক্কাসজার্ভি আইস হোটেল পৃথিবীর সর্বপ্রথম সম্পূর্ণ বরফের তৈরি হোটেল। এই হোটেলের তাপমাত্রা সবসময় মাইনাস ৫ ডিগ্রির আশপাশে থাকে।
পেরুর ন্যাচুরা ভাইভ স্কাইলজ খাড়া পাহাড়ের ঢালে ঝুলে থাকা এই হোটেলটি পেরুতে অবস্থিত। এই হোটেলের প্রত্যেকটি কামড়া বৈজ্ঞানিক উপায়ে পাহাড়ের ঢালে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এই হোটেলে যেতে হলে আপনাকে অবশ্যই গোটা পাহাড় চড়ে তারপর যেতে হবে। অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের জন্য এই হোটেলটি হতে পারে একটি আদর্শ জায়গা। ভেবে দেখুন, পাহাড়ের গা ঘেষে শূন্যে ঝুলে থেকে সন্ধ্যার সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে আপনি কফির কাপে চুমুক দিচ্ছেন। প্রিয় মানুষের সাথে সময় কাটাচ্ছেন। এরচেয়ে রোমাঞ্চকর অনুভূতি আর কী হতে পারে!