প্রেমের ফাঁদে ফেলে নিঃস্ব করতেন তারা, অতঃপর…
দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
ফরিদপুরে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিত্তবানদের জিম্মি করে অর্থ হাতিয়ে নেয়া একটি চক্রের সন্ধান মিলেছে। জেলার সদরপুর উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি একাধিক ব্যক্তিকে নিঃস্ব করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি এ চক্রের খপ্পরে পড়েন সদরপুরের মুজাহিদ মৃধা। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে সদরপুর থানায় ৯ জনসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।
থানা সূত্রে জানা যায়, মোবাইলে হঠাৎ অপরিচিত নম্বর থেকে কল আসে মুজাহিদ মৃধার ফোন নম্বরে। সেখান থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক মেয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়। তাদের মধ্যে কয়েকদিন ফোনে কথাবার্তা হয়। একপর্যায়ে মেয়েটি তাকে কল করে বাইশরশি জমিদার বাড়িতে আসতে বলে। মুজাহিদ ওই স্থানে গেলে তাকে অটোবাইকে উঠতে বলে মেয়েটি। ঘোরাফেরার একপর্যায়ে কৌশলে পূর্ব শৌলডুবী এলাকার সাবেক মেম্বার শেখ ফারুকের বাড়িতে একটি টিনের ঘরে নিয়ে মুজাহিদকে আটক করা হয়। এরপর চক্রের কয়েকজন মুজাহিদকে এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং প্রাণনাশের ভয় দেখায়। পরে তার কাছ থেকে মুক্তিপণ বাবদ ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে জোর করে চারটি সাদা নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে তার স্বাক্ষর নেয়।
বিষয়টি মুজাহিদের স্বজনরা জানতে পেরে স্থানীয় লোকজনদের নিয়ে রাতে ফারুক মেম্বারের বাড়িতে গিয়ে সোহরাব খালাসি নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে এবং মুজাহিদকে উদ্ধার করে। ওই সময় চক্রের অন্য সদস্যরা পালিয়ে যায়। বিষয়টি সদরপুর থানা পুলিশকে অবহিত করলে তারা সোহরাব খালাসীকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে কয়েকজনের নাম-ঠিকানা জানা যায়। ঐ মামলায় এরমধ্যে এজাহারভুক্ত আসামি লিমা আক্তার, শেখ ফারুক মেম্বারের স্ত্রী রেনু বেগম, সোহরাব খালাসী, রবিন খান ও মৌসুমী আক্তারকে গ্রেফতার করে ফরিদপুর জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ।
কৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান তিতাস বলেন, আমার ইউনিয়নে এমন একটি চক্র আছে, আমি আগে অবগত ছিলাম না। এই চক্রটিকে যদি দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় না আনা হয়, তবে আরো অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তানভীর জানান, অভিযান চালানোর জন্য ফোর্সের সংকট রয়েছে, তারপরও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছি। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
সদরপুর থানার ওসি মো. আব্দুল মোতালেব বলেন, এই মামলায় ইতোমধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, অপহরণ চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে নারী সদস্যকে দিয়ে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলতো। তারপর কৌশলে ডেকে নিয়ে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় করতো।