দশ বছর ধরে শুধু কাঁচা সবজিই খাচ্ছেন আনোয়ার
দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
সুস্থ-সবল থাকতে শাকসবজি খাওয়ার জুড়ি নেই। পুষ্টিবিদরাও তাই বেশি বেশি শাকসবজি খাওয়ার পরামর্শ দেন। ফুলকপি, পাতাকপি, শিম, মিষ্টি কুমড়া এসব সবজি রান্না করে খাওয়াই স্বাভাবিক বিষয়।
কিন্তু এটিই যেন অস্বাভাবিক কিশোরগঞ্জের আনোয়ার সিরাজীর কাছে। সব ধরনের সবজিই কাঁচা চিবিয়ে খান তিনি। এমনকি ভাত-রুটির মতো কোনো কিছুই মুখে দেন না। ১০ বছর ধরে শুধু কাঁচা শাকসবজি খেয়েই বেঁচে আছেন।
আনোয়ার সিরাজী কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার কাদিরজঙ্গল ইউনিয়নের পূর্ব হাত্রাপাড়া গ্রামের সিরাজ উদ্দীন মাস্টারের ছেলে। চার ভাইয়ের মধ্যে সবার বড়। তিনি একজন কৃষক। এক মেয়ে, প্রতিবন্ধী ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে তার সংসার।
আনোয়ার বলেন, আমার পছন্দের খাদ্য তালিকায় রয়েছে ফুলকপি, পাতাকপি, পেঁপে, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, লালশাক, পালংশাক, চিচিঙ্গা, কপি, করলা, পুঁইশাক, শিম, সরিষার ফুল, গাজর, টমেটো, মুলা, কাঁচামরিচ ইত্যাদি। সব ধরনের সবজি কাঁচাই খাই। কাঁচা মাছ-মাংসও খেতে পারি।
তিনি জানান, ১০ বছর আগে মরণব্যাধি হেপাটাইটিস বিতে আক্রান্ত হলে বেঁচে থাকার আশা ছেড়ে দেন চিকিৎসক ও পরিবারের সদস্যরা। তবে প্রচুর পরিমাণে ফল ও শাকসবজি খেলে হয়তো কিছুদিন বেঁচে থাকতে পারেন-এমন আশ্বাস দিয়েছিলেন চিকিৎসক। তখন তিনি প্রথমে রান্না করে শাকসবজি খাওয়া শুরু করেন। একপর্যায়ে সব শাকসবজি কাঁচাই খেতে থাকেন।
আনোয়ার জানান, প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির পেছনে থাকা নিজের খেত থেকে সবজি তুলে এনে সকালের নাস্তা সারেন তিনি। এভাবে দুপুর-রাতেও একই খাবার খান। কাঁচা শাকসবজি না খেলে তার শরীরে সমস্যা দেখা দেয় বলেও দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, শাকসবজি যত বেশি খাই আমার পেট তত বেশি ভালো থাকে। আমাকে ডাক্তার বলেছিল রান্না করে খাওয়ার জন্য। কিন্তু আমি কাঁচা খাওয়ার অভ্যাস করে ফেলেছি। প্রথমে দুই বছর শুধু পেঁপে ও বেল খেয়েছি। একটা সময় বেল না পেয়ে বেলের পাতা খেয়েও পেট ভরেছি।
আনোয়ারের চাচা শাহাবুদ্দিন আহামেদ জানান, এক সময় তার ভাতিজা খুব অসুস্থ ছিল। কাঁচা শাকসবজি খেয়ে এখন অনেকটাই সুস্থ আছেন।
কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. সাইফুল আলম যুগান্তরকে বলেন, শসা, গাজর, ক্ষীরা, পাকা পেঁপে ও বেলের মতো সবজি ছাড়া অন্য শাকসবজি কাঁচা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এতে লিভার ও কিডনিও নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তবে আনোয়ার সিরাজীর কাঁচা শাকসবজি খেয়ে ১০ বছর ধরে জীবনধারণের বিষয়টিকে ‘মিরাকল’ বলে অভিহিত করেন তিনি।