হল প্রভোস্ট বরাবর শাবি জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের চিঠি
শাবিপ্রবি প্রতিনিধি
ছাত্রদের আবাসিক হলে আসন বণ্টনের বিষয়ে নানা অনিয়ম ও অস্বচ্ছতার অভিযোগ এনে হল প্রাধ্যক্ষদের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম।
গত রোববার সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক মো. আশরাফ উদ্দিন ও সদস্য সচিব অধ্যাপক শাহ মো. আতিকুল হকের স্বাক্ষরিত হল প্রভোস্টদের দেওয়া এক চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে আবাসিক হলে আসন বণ্টনের তিন মাস পর এ বিষয়ে কথা বললেন তারা।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত এক অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে ছেলেদের আবাসিক হলগুলোতে নতুন করে ছাত্রদের সিট বন্টনের বিষয়ে নীতিমালা উপস্থাপন করেন হল নীতিমালা প্রণয়ন কমিটি।
ওই নীতিমালার আলোকে চারটি অসঙ্গতির উপর ব্যাখ্যা চাওয়ার দাবি তুলে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম।
তাদের দাবিগুলো হল-বৈধ সিট বরাদ্দ বাতিলের যৌক্তিকতা: নিয়মিত, নিরপরাধ এবং বৈধ সিট বরাদ্দপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সিট বাতিলের মতো অমানবিক সিদ্ধান্ত কেন গ্রহণ করা হয়েছে? এটি শিক্ষার্থীদের অধিকার ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন কিনা, তা ব্যাখ্যা করুন; সিট বণ্টনে বিশেষ ক্যাটাগরি: মেধার ভিত্তিতে ৬০% এবং বিশেষ প্রয়োজনের ভিত্তিতে ৪০% সিট বরাদ্দের যে নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে, সেখানে বরাদ্দপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা এবং বিশেষ প্রয়োজনের যথার্থ মূল্যায়ন হয়েছে কিনা তা জানানো প্রয়োজন; নীতিমালার সমতার অভাব: নীতিমালা অনুযায়ী, সিলেট শহরের ৭-৮ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসরতদের সিট বরাদ্দ না দেওয়ার কথা থাকলেও, একজন শিক্ষকের পুত্র হল সিটে অবস্থান করছেন। এটি কীভাবে নৈতিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, তা ব্যাখ্যা প্রয়োজন; তালিকা প্রেরণের অস্বচ্ছতা: নীতিমালার একটি ধারা মতে, হল প্রশাসন কর্তৃক কক্ষভিত্তিক বরাদ্দের তালিকা বিভাগগুলোতে পাঠানোর কথা থাকলেও তা এখনও কার্যকর হয়নি। এর যৌক্তিক কারণ জানানো প্রয়োজন।
প্রভোস্টকে দেওয়া চিঠিতে গত ২৬ অগাস্ট বহিরাগতদের দ্বারা কতিপয় শিক্ষক ও সমন্বয়কের সহযোগিতায় আবাসিক হলে অবস্থানরত ছাত্রদের নির্দয়ভাবে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।
এ বিষয়ে জাতীয়তাবাদী ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, “আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে নীতিমালার অস্বচ্ছতা এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার সংক্রান্ত এই বিষয়গুলোর সুষ্ঠু ব্যাখ্যা আশা করছি। এটি যদি না করা হয়, তবে এটি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিকট গোঁজামিল ও বিভ্রান্তির সৃষ্টি করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিবেশ ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এসব প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দেওয়া জরুরি। আশা করি, প্রশাসন শিক্ষার্থীদের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বিষয়গুলো দ্রুত সমাধান করবে।”
এ বিষয়ে শাহপরান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ইফতেখার আহমদ বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের মাঝে মেধা ও বিশেষ বিবেচনার মাধ্যমে নিরপেক্ষভাবে হলের সিট বন্টন করেছি। তবে আমাদের এ বন্টনের মধ্যেও উনিশ-বিশ লজিস্টিক ইরোর থাকতে পারে।”
তিনি বলেন, “প্রত্যেক বিভাগ থেকে দেওয়া তালিকাভুক্ত শিক্ষার্থীদের মাঝেই হলের সিট বন্টন করা হয়। তবে এক্ষেত্রে কিছু বিভাগ হলের সিট বন্টনের বিষয়ে আমাদেরকে কোন সাহায্য- সহযোগিতা করেনি। তাদের যুক্তি ছিল যে, এগুলো বিভাগের কাজ না। সেক্ষেত্রে আমরা ছাত্র উপদেষ্টাসহ ওইসব বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাঝে মেধা ও মানবিক বিবেচনায় সিট বন্টন করি। এখন যেহেতু বিভাগ থেকেই সিট বরাদ্দের জন্য শিক্ষার্থীদের নাম দেওয়া হয়েছে, সেহেতু সিট বন্টনের ওই তালিকা আবার বিভাগের প্রেরণের প্রশ্নই বা কেন আসবে!