কোন বিশ্ববিদ্যালয় যদি গুচ্ছে থাকতে না চায়, জোর করা হবে না: সহকারী শিক্ষা উপদেষ্টা
শাবিপ্রবি প্রতিনিধি
কোন বিশ্ববিদ্যালয় যদি গুচ্ছে থাকতে না চায়, স্বতন্ত্রভাবে পরীক্ষা নিতে চায়, সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালগুলোকে কোন জোর আরোপ করা হবে না মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রণালয় বিশেষ সহকারী অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে এক মতবিনিমিয় ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ছলিম মো. আবদুল কাদিরের সঞ্চালনায় ও উপাচার্য অধ্যাপক এ এম সরওয়ার উদ্দিন চৌধুরী সভাপতিত্বে শিক্ষামন্ত্রণালয় বিশেষ সহকারী অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে যে সিদ্ধান্ত হবে, সে সিদ্ধান্তের আলোকে তাদেরকে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোই তাদের নিজস্ব ভালোমন্দ বুঝে, তারাই ভালো জানে তাদের জন্য কোন পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া ভালো হবে। কেউ যদি গুচ্ছে অন্তর্ভুক্ত থেকে পরীক্ষা নিতে চায়, সে সুযোগ করে দেওয়া হবে। আবার কোন বিশ্ববিদ্যালয় যদি গুচ্ছ অন্তর্ভুক্ত থাকতে না চায়, তাহলে তাদেরকে গুচ্ছে অন্তর্ভুক্ত হতে জোর আরোপ করা হবে না।”
তিনি বলেন, “দেশ প্রেমের চেয়ে বড় কিছু হয় না। দেশের জন্য ভালো কিছু করতে হলে মূল্যবোধ থাকা প্রয়োজন। এ মূল্যবোধ তৈরি হয় শৈশব কালে। কিন্তু দুঃখের বিষয় বেশিরভাগ পরিবারে মূল্যবোধের ঘাটতি রয়েছে। স্কুলে শিক্ষকরা তাদেরকে মূল্যবোধ শিক্ষা দিবে। কিন্তু দেখা যায় সেখানেও অনেক শিক্ষককের মূল্যবোধ বলতে কিছু নেই।”
“এজন্য শৈশবকাল থেকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মূল্যবোধ, নৈতিকতা গড়ে তুলতে আমরা শিক্ষা ব্যবস্থা কিছু পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নিয়েছি। পাঠ্যপুস্তকে প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত মূল্যবোধ সম্পর্কিত অধ্যায় যুক্ত করা হবে।”
শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন নিয়ে তিনি আরও বলেন, “ দেশে যাতে শিক্ষিত বেকার তৈরি না হয়। এজন্য এসএসসি ও এইচএসসি’র পরে শিক্ষার্থীদেরকে কারিগরি শিক্ষাদানের ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। যাতে তারা শিক্ষাজীবন শেষে কর্মক্ষেত্রে সহজে ঢুকতে পারে।”
“বিশ্বে নার্সদের বিশাল চাহিদা রয়েছে। কেয়ারগিভার হতে হলে ভালো যোগাযোগ দক্ষতা থাকা লাগবে। ভালো ইংরেজি জানা থাকা লাগবে। এজন্য ব্রিটিশ কাউন্সিলসহ বিভিন্ন সংস্থা আমাদের হেল্প করে যাচ্ছে।”
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে তিনি বলেন, “ এখন ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের যুগ। সামনে আমাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা(এআই) বিপ্লবের যুগ কড়া নাড়ছে। একটা ভাল খবর হচ্ছে, ইতিমধ্যে দেশের অনেক সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এআই নিয়ে কাজ করছে। তবে সে গতিটা কম। আমি আশা করছি শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়গুলোর উপর জোর দিবে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগের পৃথিকৃৎ হিসেবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।” এছাড়া পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার্থে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের এসব বিষয়ের উপর গবেষণা করার আহ্বান জানান তিনি।
মতবিনিময় সভায় শিক্ষামন্ত্রণালয় বিশেষ সহকারীকে (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) ফুল দিয়ে সংবর্ধনা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এম সরওয়ার উদ্দিন চৌধুরী ও উপ উপাচার্য অধ্যাপক সাজেদুল করিম।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ইসমাঈল হোসেন, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক এসহাক মিয়া, বিভিন্ন অনুষদের ডিন , বিভাগীয় প্রধান, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক -শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষামন্ত্রণালয় বিশেষ সহকারী অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দিনের সফরে এসেছেন। এ সফরে বৃহস্পতিবার মতবিনিময় ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এক হাজার আসন বিশিষ্ট দুটি আবাসিক হল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। বিকালে প্রশাসনিক ভবন-১ এর সংবাদ সম্মেলন কক্ষে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি।
আগামী ৩১ জানুয়ারি রাজনীতি, সমাজ এবং উন্নয়ন বিষয়ে কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠেয় প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিয়ে ডিন, বিভাগীয় প্রধান এবং দপ্তর প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করবেন। এরপর ১ ফেব্রুয়ারি মিনি অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠেয় গবেষণা ও উদ্ভাবন বিষয়ক ১২তম বার্ষিক সম্মেলনে অংশ নেবেন।