সুবিপ্রবি ক্যাম্পাস সুনামগঞ্জে নির্মাণের দাবিতে স্মারকলিপি
রাজু আহমেদ রমজান, সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (সুবিপ্রবি) ক্যাম্পাস জেলা সদরে করার দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন আন্দোলন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ড. এম আমিনুল ইসলামের কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) অতিথি ভবনে আন্দোলনের সদস্যসচিব ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মুনাজ্জির হোসেন সুজন স্মারকলিপি জমা দেন।
এসময় শাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ ড. মো. ইসমাইল হোসেনসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সুনামগঞ্জ বাস মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ মুর্শেদ আলম, বালু-পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহাব উদ্দিন শাবুল, শাবিপ্রবি ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা নিয়ে জেলাবাসীর আপত্তি থাকা সত্ত্বেও জেলা সদরসহ অপর ৯ উপজেলা বাদ দিয়ে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রীর ব্যক্তিগত ইচ্ছা বাস্তবায়ন করতে নিজের পদের অপব্যবহার করে সব বড় বড় উন্নয়ন কার্যক্রম তার নিজ উপজেলা ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদরের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ আনা হয়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ, সুবিপ্রবির জন্য প্রস্তাবিত বা নির্ধারিত দেখার হাওরটি জেলার একটি সুবিশাল হাওর। এখানে বিপুল পরিমাণ বোরো ধান উৎপাদনসহ এটি মিঠাপানির মাছের একটি বড় উৎস। এই হাওরের পাশ ঘেঁষেই সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কটি অবস্থিত যেখানে ইতোমধ্যে স্থাপিত হয়েছে মেডিকেল কলেজ, টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এখন যদি সুবিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনাদি নির্মিত হয় তাহলে হাওরের প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট হয়ে কৃষিজ উৎপাদন ব্যবস্থায় বিরূপ প্রভাব পড়বে। পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় জলাবদ্ধতাসহ পানি নিষ্কাশনের তীব্র সংকট দেখা দিবে। তাই বিশিষ্টজন ও বিশেষজ্ঞরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস দেখার হাওরের পরিবর্তে অন্য জায়গায়, প্রধানত জেলা শহরের কাছে স্থাপন করার পক্ষে মত দিয়েছেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, গেল ২২ জানুয়ারি জেলা শহরের শহিদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি (পাবলিক লাইব্রেরি) পাঠাগারে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সুনামগঞ্জের সবস্তরের মানুষ সুবিপ্রবি ক্যাম্পাস শহরের কাছাকাছি স্থাপন করার বিষয়ে দৃঢ় সমর্থন প্রকাশ করেন। পাশাপাশি পুরো জেলার মানুষের সুবিধার্থে দুটি পৃথক জায়গার কথাও উল্লেখ করা হয়। যেখানে সরকারের বিপুল পরিমাণ খাস জমি রয়েছে। যার একটি সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর-তাহিরপুর সড়কের গৌরারং ইউনিয়নের পাশে এবং অপরটি জেলা শহরের কাছে।
আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মুনাজ্জির হোসেন সুজন বলেন, ‘গত ১৫ বছরে সুনামগঞ্জ জেলা সদরে কোন উন্নয়ন হয়নি। শুধুমাত্র শান্তিগঞ্জ উপজেলায় মেডিকেল কলেজ, টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটি, ধান গবেষণা কেন্দ্রসহ ছয়টি মেগা প্রকল্প হয়েছে। এটা সুনামগঞ্জকে পেছনে ফেলার একটা পরিকল্পনা। এই বিশ্ববিদ্যালয় সুনামগঞ্জে হলে সেখানে একটা আলোকিত সমাজ ও শিক্ষাব্যবস্থা সৃষ্টি হবে বলেন তিনি।