জামের বীজের উপকারিতা
জাম গ্রীষ্মের সুস্বাদু ফলের মধ্যে একটি। এটি কেবল সুস্বাদুই নয়, বরং প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণেও ভরপুর। সাধারণত এর আমরা ফেলে দিই। তবে আপনি জেনে অবাক হবেন যে, জামের বীজ গুঁড়া করে খাওয়া হলে তা স্বাস্থ্যের জন্য বিস্ময়কর কাজ করতে পারে। হজমশক্তি বৃদ্ধি থেকে শুরু করে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা পর্যন্ত, খালি পেটে জামের বীজের গুঁড়া খাওয়ার পাঁচটি উপকারিতা জেনে নিন-
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
ডায়াবেটিসের মতো অসুখকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে নিয়মিত জামের বীজ খেতেই পারেন। এক্ষেত্রে প্রথমে এই ফলের বীজ গুঁড়া করে নিন। তারপর প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস পানিতে ছোট এক চামচ জামের বীজের গুঁড়া মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর সেই পানি চুমুক দেয়ার পালা।
এই নিয়ম মেনে কয়েকদিন জামের বীজ ভেজানো পানীয় খেতে পারলেই দেখবেন সুগার লেভেল কমেছে। আসলে এই পানীয় খেলে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বেড়ে যায়। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা অনেকটাই নিম্নমুখী হয়। এমনকি সুস্থ থাকে শরীরের অন্যান্য অঙ্গও।
ব্লাডপ্রেশার থাকে সুরক্ষিত গণ্ডিতে
হাই ব্লাডপ্রেশারকে বলা হয় নীরব ঘাতক। এই অসুখকে ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে কিডনি, হার্ট, চোখসহ দেহের একাধিক অঙ্গের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। তাই যেভাবেই হোক হাই ব্লাড প্রেশার কমাতে হবে।
এই কাজটিতে আপনার বন্ধু হতে পারে জামের বীজ। এই বীজের গুঁড়া মিশ্রিত পানীয় নিয়মিত খেলে উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এমনকি সুরক্ষিত থাকে হৃৎপিণ্ড। হার্ট অ্যাটাক এবং হার্ট ফেলিওরের মতো সমস্যা থেকে নিরাপদ দূরত্বেও থাকা যায়।
এই বীজের গুণেই কমে ওজন
ওজন বেশি থাকাটা কোনো কাজের কথা নয়। এক্ষেত্রে ওবেসিটির কারণে ডায়াবেটিস, হাই প্রেশার, কোলেস্টেরলসহ একাধিক জটিল অসুখ পিছু নিতে পারে। তাই সাবধান হয়ে ওজন কমাতে হবে। এক্ষেত্রে নিয়মিত জামের বীজ খেলেই মেদ ঝরে যায়। তাই ওজন বেশি থাকলে জামের বীজের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়ে নেয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
পেটের জন্য উপকারী
বাঙালি আর পেটের সমস্যা যেন সমার্থক হয়ে উঠেছে। বদহজম, গ্যাস ও অ্যাসিডিটির মতো জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে একের পর এক অ্যান্টাসিড গিলে ফেলতে আমাদের কোনো জুড়ি নেই।
তবে এই ধরনের ওষুধ নিয়মিত খেলে কিডনি, লিভারে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ঘরোয়া টোটকার সাহায্যেই এই সমস্যার সমাধান খুঁজে নেয়া দরকার। এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে জামের বীজ। এই বীজ নিয়মিত খেলে পেটের অসুখ থেকে সহজে নিস্তার পাওয়া যায়।
ইমিউনিটি চাঙ্গা থাকে
রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ঠিকমতো কাজ করলে ভয়ংকর সংক্রামক অসুখ থেকে মুক্তি মেলা সম্ভব। এক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও ফাঙ্গাসের মতো জীবাণু দেহে দাঁত ফোঁটাতে পারে না।
তাই যেভাবেই হোক ইমিউনিটি বাড়াতেই হবে। আর আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের কথায়, নিয়মিত জামের বীজ খেলেই ইমিউনিটি বাড়ানো সম্ভব। তাই প্রতিদিন সকালে জামের বীজের গুঁড়া মেশানো পানিপান করতে ভুলবেন না যেন!