ভিটামিন সির চাহিদা মেটাতে জাম্বুরা খাবেন
জাম্বুরায় কেবল ভিটামিন সি নয়, আছে ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২ ও ফোলেট। পানিতে দ্রবণীয় এসব উপাদান আমরা রান্না করা খাবার থেকে ঠিকভাবে পাই না। তাই রোজ কাঁচা ফলমূল বা সবজির সালাদ খাওয়া জরুরি।
অন্যান্য পুষ্টি উপাদানও আপনি জাম্বুরা থেকে পাবেন। আমাদের দেহের এক দিনের ভিটামিন সির চাহিদা মেটাতে কতটা জাম্বুরা খাওয়া প্রয়োজন, আরও কী কী উপকার মিলবে তাতে, এ বিষয়ে জানালেন টাঙ্গাইলের কুমুদিনী সরকারি কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের প্রধান শম্পা শারমিন খান।
কতটা ভিটামিন সি পাবেন
গড়পড়তা একটা জাম্বুরা খোসা ছাড়ানোর পর সেটির ওজন দাঁড়ায় ৬০০ গ্রামের একটু বেশি। মজার ব্যাপার হলো, এই পরিমাণ জাম্বুরায় যতটা ভিটামিন সি আছে, তা একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের রোজকার চাহিদার ৪০০ শতাংশের বেশি। এই পরিমাণ জাম্বুরায় অন্য যেসব পুষ্টি উপাদান আছে, সেসব থেকেও আপনার নানা পুষ্টি উপাদানের চাহিদার অনেকটাই মিটবে।
রোজ কতটা জাম্বুরা খাবেন
বুঝতেই পারছেন, মোটামুটিভাবে একটা জাম্বুরার চার ভাগের এক ভাগ খেলেই আপনার রোজকার চাহিদামাফিক ভিটামিন সি পেয়ে যাবেন। এর চেয়ে কম পরিমাণ জাম্বুরা খেলে আপনাকে অন্য উৎস থেকে ভিটামিন সি গ্রহণ করতে হবে। সব মিলিয়ে চাহিদাটা পূরণ করতে পারলেই হলো।
বেশি খেলে লাভ না ক্ষতি
এর চেয়ে বেশি পরিমাণ জাম্বুরা খেলে তা কিন্তু আপনার দেহে জমা থাকবে না। ফলে এক দিন বেশি পরিমাণ জাম্বুরা খেয়ে আপনি কয়েক দিনের চাহিদা মিটিয়ে নেবেন, তেমনটা ভাবার সুযোগ নেই। তবে কিছুটা বেশি খেয়ে ফেললেও তেমন কোনো অসুবিধা নেই। পানিতে দ্রবীভূত হয়ে যায় বলে প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যাবে বাড়তি ভিটামিন সি।
জাম্বুরায় যত উপকার
আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ঠিক রাখার জন্য ভিটামিন সি আবশ্যক, যা পর্যাপ্ত পরিমাণে পাবেন জাম্বুরায়। ত্বকের স্বাভাবিক টান টান ভাব ধরে রাখতে কোলাজেন প্রোটিন তৈরি হওয়া চাই ঠিকঠাক। এই কোলাজেন তৈরির জন্যও প্রয়োজন ভিটামিন সি। দেহকে ভেতর থেকেও তরুণ রাখে এই ভিটামিন।আমাদের অন্ত্রে যে উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে, তাদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে জাম্বুরার আঁশ। জাম্বুরার আঁশ রক্তের খারাপ চর্বির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সহায়তা করে। কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে খাদ্যতালিকায় রাখা চাই পর্যাপ্ত আঁশ। ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২, ফোলেট, কপার, পটাশিয়ামসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান আমাদের সার্বিক সুস্থতার জন্য প্রয়োজন।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে জাম্বুরার মতো ফল। ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তির জন্যও জাম্বুরা দারুণ। তবে পটাশিয়াম বেশি থাকায় দীর্ঘমেয়াদি কিডনির রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য জাম্বুরা ভালো নয়। জাম্বুরার আঁশ খারাপ চর্বির মাত্রা কম রাখতে সাহায্য করে। তবে যাঁদের রক্তে খারাপ চর্বি নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনো ওষুধ সেবন করতে হয়, তাঁদের জন্য এটিকে সেই ওষুধের বিকল্প ধরে নেওয়ার সুযোগ নেই। বরং কিছু ক্ষেত্রে এ ধরনের ওষুধের সঙ্গে জাম্বুরা খাওয়া অনিরাপদ হতে পারে। তাই চর্বি কমানোর ওষুধ সেবন করলে এ বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রাখুন।