শেখ হাসিনা মানুষের সঙ্গে ‘বাড়ির মালিকের মতো আচরণ করতেন: জামায়াত আমির
দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের সঙ্গে ‘বাড়ির মালিকের মতো আচরণ করতেন’ বলে অভিযোগ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘তারা দেশের মালিক থাকলে দেশ ছেড়ে পালাত না। বাড়িওয়ালা বাড়ি ছেড়ে পালায় না, বরং ভাড়াটিয়া খেলাপি হলে পালিয়ে যায়। শেখ হাসিনার বেলায়ও তাই হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) খুলনার পাইকগাছায় এক কর্মিসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “তারা এ দেশে জনগণের শাসন কায়েম করেনি, একটি পরিবারকেই জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছিল। এই পরিবারের হাবভাব ছিল ‘আমরাই এই জাতির মালিক, বাকি ১৮ কোটি মানুষ সব ভাড়াটিয়া। বাড়ির যিনি মালিক, তিনি বাড়ি রেখে কোথাও পালিয়ে যান না। ঘর ছেড়ে কে যায়? ভাড়াটিয়া যায়।”
তিনি বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে আনুপাতিক হারে। কোনো নির্দিষ্ট দলের হাতে যেন ভোট ও দেশ আর চলে না যায়। আমরা একটি তারুণ্য নির্ভর সমাজ দেখতে চাই।
জামায়াতের আমির বলেন, ‘মা-বোনদের জামায়াতভীতি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু জামায়াত দেশ সেবার সুযোগ পেলে নিরাপত্তা ও মর্যাদার সাথেই মা-বোনেরা দেশ গড়ার কাজে অংশ নেবে।’
সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু বলতে কোন বাক্য এদেশে নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সবাই মিলেমিশেই দেশ গড়তে চায় জামায়াতে ইসলামী। বিশেষ কোনো গোষ্ঠী নয়, বরং প্রত্যেকেই আমরা একেকজন যোদ্ধা।’
আওয়ামী লীগ আমলের তিনটি নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে জামায়াতের আমির বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচন ছিল ভোটারবিহীন, ১৮ সালে হয় নিশিরাতের নির্বাচন আর ২৪ সালে হয় ডামি নির্বাচন।
সুতরাং এমন নির্বাচন আর দেশবাসী দেখতে চায় না। ডামি নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু এদেশের ছাত্র-জনতার মাধ্যমে আল্লাহ তাদের সে অপশাসন থেকে দেশবাসীকে রক্ষা করেছেন। আওয়ামী লীগ দেশের বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন এমনকি শিক্ষাব্যবস্থা সব ধংস করেছে। মেয়েদের ইজ্জতের কোনো গ্যারান্টি ছিল না। এসব বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ ফুঁসে উঠেছিল।’
রংপুরের আবু সাঈদের মতো অসংখ্য ছাত্র-জনতার বুকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। শেখ হাসিনা দেশ থেকে চলে গেলেও দেশকে শান্তিতে রাখতে দিচ্ছে না। চারদিকে ষড়যন্ত্রের আগুন জ্বলছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ওপর অবিচার করা হয়েছে। কিন্তু আমরা বলি আওয়ামী লীগের ওপর সুবিচার করা হোক। কেননা তাদের ওপর সুবিচার করা হলেও তাদের শাস্তি হবে। তাদের বিচার হতে এ জন্য যে আর যেন কেউ এমন দুর্বৃত্ত না হতে পারে। আমাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে আমাদের সন্তানরা। তাদের সে মর্যাদা আমাদের রক্ষা করতে হবে।’