‘বৃদ্ধ বয়সে সাপোর্ট পেলে বয়োজ্যেষ্ঠরাও প্রোডাক্টিভ হিসেবে তৈরি হবে’
শাবিপ্রবি প্রতিনিধি
বর্তমানে পাবলিক হেলথ বিশ্বব্যাপী খুবই আলোচিত একটি বিষয় এবং করোনা মহামারি পরবর্তী সময়ে খুবই প্রাসঙ্গিক। মানুষের স্বাস্থ্য-সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ের সমন্বয়েই এই বিভাগটি গঠন করা হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে রোগ নিরাময় সংক্রান্ত কাজের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে পাবলিক হেল্থ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পাবলিক হেল্থ বিভাগের আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. হাফিজ টি এ খান। এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।
বৃদ্ধ বয়সে বয়োজ্যেষ্ঠদের স্বাস্থ্য নিয়ে বিশ্বখ্যাত এ অধ্যাপক বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশে বয়োজ্যেষ্ঠদের জন্য ভালো স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ-সুবিধা নেই। অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ আছে বহু বছর যাবত বিদেশে অবস্থান করেন, ক্যারিয়ারের এক পর্যায়ে তারা নিজ দেশে ফিরে এসে বসবাস করতে চান। কিন্তু অবাক করা বিষয় বৃদ্ধ বয়সে বয়োজ্যেষ্ঠদেও যে স্বাস্থ্যসেবা প্রয়োজন আমাদের দেশে সে ব্যবস্থা নেই। ফলে দেশে এসে নানাবিদ সমস্যার মধ্যে পতিত হন তারা। তবে যারা বিদেশ থেকে আসেন অধিকাংশই প্রোডাক্টিভ, স্কিলড। আমরা যদি তাদের সেবাটা নিশ্চিত করতে পারি তারা শেষ বয়সেও দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবেন।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে বয়স্ক ব্যক্তিদের সার্ভিস দেওয়ার সিস্টেম ঠিক নাই, যা আছে তাতে প্রচুর অর্থ খরচ করতে হয়। টাকার অভাবে নিম্ন-মধ্যবিত্তরাও ভালোমতো সেবা নিতে পারে না। তাই পাবলিক হেল্থকে গুরুত্বসহকারে নিলে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়বে। তাতে স্বাস্থ্যখাত আরও উন্নত হবে, মানুষ নিজেদের সেবাটুকু ঠিক ভাবে নিতে পারবেন।
সিলেটের মানুষের জন্য পাবলিক হেল্থ সচেতনতা ও উন্নয়ন নিয়ে হাফিজ টি এ খান বলেন, আমরা সিলেটের মানুষের জন্য হেল্থ এন্ড ওয়েলবিং সিস্টেম চালু করতে চাই। কারণ এখানে প্রতি বছর লন্ডনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বয়োজষ্ঠ্যরা আসেন, দেশে এসে তারা প্রয়োজনীয় সেবাটুকু পায় না। তাই আমরা তাদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে কাজ করতে চাই।
তবে এরজন্য প্রয়োজন পাবলিক হেল্থ এর জ্ঞান। বর্তমানে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ দেশের কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে পাবলিক হেল্থ বিভাগ চালু রয়েছে, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও এ বিভাগটি চালু করতে যাচ্ছে। বিভাগটি চালু হলে এ অঞ্চলের মানুষসহ দেশের মানুষ উপকৃত হবে। এক্ষেত্রে নতুন করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
পাবলিক হেল্থ সচেতনতা নিয়ে শাবিপ্রবিকে মনোনীত কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনেক মেধাবী, তারা স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তর শেষ করে বিদেশ পড়তে যাবে, পড়াশোনা শেষে আবার দেশে আসবে, তবে সে সময়ে তাদের সেবা দিতে হবে, এই সেবা কে দেবে? তাই এখানে একটা চ্যালেঞ্জ থেকেই যায়। এখানের শিক্ষার্থীদের পাবলিক হেল্থ ডিগ্রী থাকলে তারা আর চ্যালেঞ্জে পড়বে না, নিজে সেবা নিয়ে মানুষের পাশেও দাঁড়াতে পারবে।
এ বিষয়ে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পাবলিক হেল্থ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. এ বি এম আলাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, দেশে বসে স্বল্প খরচে বার্মিংহামের পাবলিক হেল্থ ডিগ্রি নিতে পারবেন দেশের শিক্ষার্থীরা, ডুয়েল এওয়ার্ড ৬ মাস মেয়াদী কোর্সে ৬টি বিষয় রয়েছে, তা থেকে শিক্ষার্থীরা যেকোন বিষয়ে ডিগ্রী নিতে পারবে। কোর্সটির মোট ১৮০ ক্রেডিট থেকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২০ ক্রেডিট শেষ করে বাকি ৬০ ক্রেডিট চাইলে বার্মিংহাম সিটি ইউনিভার্সিটি থেকে অফার লেটার নিয়ে সেখানে শেষ করতে পারবেন। ফলে তাদের বিদেশ গমনের পথটা আরও সহজ হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, এই কোর্সটি করতে একজন শিক্ষার্থীর মাত্র ১৫০০ পাউন্ড খরচ হবে। যা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্ভব না। ডিগ্রীটা দেশের বাইরে গিয়ে কেউ করতে চাইলে তাদের ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। তাই যে কোন শিক্ষার্থী কিংবা চাকরিজীবী চাইলে সহজে এ কোর্স করতে পারবে। তারা চাইলে সাপ্তাহিক বন্ধের মধ্যে ক্লাসগুলো করতে পারবেন।