বিয়ানীবাজারে নিখোঁজ আতঙ্ক উদ্বিগ্ন অভিবাবকরা
বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি
সিলেটের বিয়ানীবাজারে উদ্বেগজনক হারে নিখোঁজ তরুণদের সংখ্যা বাড়ছে। একইসাথে নিখোঁজ হচ্ছে তরুণী শিক্ষার্থীও। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে এরকম অন্তত ৪টি ঘটনা ঘটেছে। নিখোঁজ প্রতিটি ঘটনার পিছনে রয়েছে নানারহস্য। যদিও অন্তরালের ঘটনা না জানায় স্থানীয় জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। পরপর এ ধরনের কয়েকটি ঘটনায় অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন।
জানা যায়, গত দুই সপ্তাহে বিয়ানীবাজার থেকে নিখোঁজ হওয়াদের মধ্যে একজনের সন্ধান এখনো মিলেনি। মারজান আহমদ (২৮) নামের ওই তরুণ পৌরশহরে মোবাইলের ব্যবসা করেন। তার বাড়ি মুড়িয়া ইউনিয়নের বড়দেশ গ্রামে। বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে এবং পরিবারের সদস্যরা তার সাথে কোনো যোগাযোগ করতে পারছেন না। নিখোঁজের কয়েক ঘণ্টা পর তার ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটি চনগ্রাম যাত্রী ছাউনির কাছে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, গাড়ির অবস্থা দেখে ধারণা করা হচ্ছে যে, এটি পরিকল্পিত অপহরণের ঘটনা হতে পারে। তবে এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
গত ২৪অক্টোবর বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় কলেজ পড়–য়া আরাফাত আহমদ সোহান (২০)। পিতার মৃত্যুর মাত্র কয়েকদিন পরই নিখোঁজ হয় সে। পাতন গ্রামে তার বাড়ি। এখনো পর্যন্ত তাকে পাওয়া যায়নি বলে জানান মুল্লাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান।
এদিকে সোমবার রাতে শিপার আহমদ (২৪) নামের অপর এক তরুণ নিখোঁজ হয়। এরমাত্র কয়েকঘন্টা পর তাকে সিলেট-বিয়ানীবাজার সড়কের আঙ্গারজুর সেতুর নীচে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রেমঘটিত বিষয়কে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে বলে আইনশৃংখলা বাহিনী সূত্র জানায়। তার বাড়ি ঘুঙ্গাদিয়া গ্রামে।
গত সপ্তাহে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের ছাত্রী মাহিমা আক্তার (২৩)-কে নিখোঁজের ৫ দিন পর পাওয়া যায়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নিখোঁজ হয় কলেজ ছাত্র কামরান হোসেন (২০)। সে দেউলগ্রামের মৃত কয়েছ আহমদের ছেলে। এদিন রাতেই তার সন্ধান পান পরিবারের সদস্যরা।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, মোবাইলে জুয়া খেলা, পরিবারকে জিম্মী করে অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়া, প্রেমঘটিত কারণে বিয়ানীবাজারের তরুণ-তরুণীরা নিখোঁজ হচ্ছে। কেউ আবার অভিমান করে বাড়ি থেকে চলে যায়।বিয়ানীবাজার উপজেলা সুজন’র সভাপতি এডভোকেট মো: আমান উদ্দিন জানান, অনেকে অপহরণ হয়েছে মর্মে বলাবলি করলেও প্রকৃত ঘটনা এমন নয়। ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধারে নিখোঁজের নামে কোন তরুণ নিজ থেকে আত্মগোপন করতে পারে। এ ধরনের ঘটনা হ্রাস করতে পুলিশকে আইনী ভুমিকা নিতে হবে।
বিয়ানীবাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো: ছমেদ আলী জানান, আইনশৃংখলা বাহিনীর তদন্তে নিখোঁজ রহস্যের অনেক কারণ পাওয়া যায়। তবে সংশ্লিষ্ট পরিবারকে হেয় না করতে আমরা বিষয়টি মানবিকভাবে দেখি। তিনি বলেন, মারজান ও সোহানকে এখনো পাওয়া যায়নি। পুলিশের একাধিক টিম তাদের উদ্ধারে কাজ করছে।