বিরক্ত’ পুলিশের নাগালে নেই আসামি, লুণ্ঠিত মাল উদ্ধার হয়নি ১৮ দিনে
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপকেলার নতুনব্রিজের করিমপুর সড়কের খোয়াই নদীর বাঁধে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার তরুণীর লুণ্ঠিত মালপত্র উদ্ধার হয়নি ১৮ দিনেও। এ ঘটনায় চারজনকে আসামি করে চুনারুঘাট থানায় মামলা করেছেন ওই তরুণীর মা। মূল আসামি নাগালে আসেনি। উদ্ধার হয়নি মালপত্র। এ নিয়ে সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের উত্তর দিতে বেশ ‘বিরক্ত’ তদন্ত কর্মকর্তা।
জানা গেছে, মামলা দায়েরের পর পারভেজ নামে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরেক আসামি শিবলু ওরফে শরীফ স্বেচ্ছায় আদালতে হাজির হয়। ঘটনার মূল হোতা কামাল ও রায়হান এখনও পলাতক। তাদের এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেননি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ।
এদিকে, তরুণীকে ধর্ষণ ও তাঁর মালপত্র লুটের ঘটনা তদন্ত এবং সব আসামি এখনও গ্রেপ্তার না হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, মামলার প্রধান আসামি কামাল মিয়াকে গ্রেপ্তারের পর তাকে আর্থিক সুবিধা গ্রহণের বিনিময়ে ছেড়ে দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম। এমন পরিস্থিতিতে বিচার পাওয়া নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
নবীগঞ্জ উপজেলার দুই তরুণী ঢাকায় একটি বাসায় পরিচারিকার কাজ করেন। সম্পর্কে তারা একে অপরের চাচাতো বোন। একজনের বয়স ১৮ ও অপরজনের ১৭। সম্প্রতি দ্বিতীয়জনের বিয়ে ঠিক হয়। এ উপলক্ষে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ছুটি নিয়ে বাড়ি আসেন তারা। বাড়ি আসার পথে বাস থেকে নেমে অটোরিকশা সিএনজিযোগে শায়েস্তাগঞ্জের নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে চালক তিন তরুণকে তুলে নেয়। পরে তারা ওই দুই তরুণীকে খোয়াই নদীর বাঁধ এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ১৮ বছর বয়সী তরুণী। এ সময় অপর তরুণী সেখান থেকে পালাতে সক্ষম হয়। পরে ফিরে এসে ঘটনাস্থল থেকে ধর্ষণের শিকার তরুণীকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এর আগেই তাদের সঙ্গে থাকা মালপত্র নিয়ে পালিয়ে যায় ওই চার তরুণ।
এ ঘটনার দু’দিন পর ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে চুনারুঘাট থানায় অটোরিকশার চালকসহ চারজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার বাদী জানান, ঢাকায় কাজ করে তাঁর মেয়ে ১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা জমিয়েছিল। এ ছাড়া কিছু স্বর্ণালংকার ও দুটি মোবাইল ফোনসেট ছিল। সেগুলো নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় দুটি মেয়েরই ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে গেছে। তাদের বিয়েও ভেঙে গেছে। এদিকে গ্রেপ্তার আসামী পারভেজ ও পলাতক আসামী রায়হান একটি ভিডিওতে জানায়, প্রধান আসামী কামাল ও শিবলু ওরফে শরীফ তুরুণীকে ধর্ষণের পর তাদের সঙ্গে থাকা নগদ টাকা ও মালামাল লুটে কামালের পিতা ওস্তার মিয়ার কাছে জমা রাখে। কিন্তু তদন্তকারী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করার নামে চোর পুলিশ খেলা করছেন।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের মোবাইল ফোনে কল করে কথা বলতে চাইলে তিনি পেশাদার আচরণ করেননি। দায়সারাভাবে জানান, মূল আসামির বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।