চুনারুঘাটে স্কুলছাত্রীকে ইভটিজিং, বখাটের ৬ মাসের কারাদণ্ড

নুর উদ্দিন সুমন, হবিগঞ্জ
হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে কোচিংয়ে যাওয়ার পথে এক ছাত্রীকে ইভটিজিংয়ের অভিযোগে আব্দুল মান্নান (২১) নামে এক বখাটেকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
শনিবার দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুব আলম মাহবুব আলম এ দন্ডাদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আব্দুল মান্নান মিরাশি গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে।
তিনি পেশায় হোটেল বয়, পুলিশ ও ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, শনিবার (৮ মার্চ) সকালে উপজেলার কালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের জনৈক হিন্দু সম্প্রদায়ের দশম এক শ্রেণীর ছাত্রী স্কুলে কোচিংয়ে যাওয়ার পথে স্থানীয় হান্নানের মুদি দোকান অতিক্রম করার সময় ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত ও স্পর্শের চেষ্টা করে।
এসময় ওই ছাত্রী শোর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে বখাটে মান্নানকে আটক করে পুলিশে খবর দেয় । খবর পেয়ে থানার উপপরিদর্শক স্বপন চন্দ্র সরকারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে দুপুরে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপর্দ করেন। এতে ইভটিজিংয়ের কথা স্বীকার করলে মান্নানকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। এছাড়াও অভিযোগ উঠেছে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে বখাটে এবং ভদ্রবেশী ইভটিজারদের উপদ্রব এখন বেড়ে গেছে। এসব বখাটে এবং ইভটিজাররা স্কুল ও কলেজের সামনে, পথে এবং আশপাশে দলবেঁধে দাঁড়িয়ে থাকে। এরা ছাত্রীদের উক্ত্যক্ত করে এবং প্রেম নিবেদন করে থাকে। এতে নম্রভদ্র মেয়েরা বিব্রতবোধ করে এবং অনেক সময় নিরাপত্তাহীনতাবোধ করে। এমন অভিযোগ বেশকিছু অভিভাবক করেছেন।
সরজমিনে বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের সামনে এবং আশপাশে বেশ কিছু বখাটে তরুণ প্রায়ই দাঁড়িয়ে থাকে অথবা কোনো দোকানে বা খালি জায়গায় বসে থাকে। স্কুলের কোচিং ও সম্প্রতি ক্লাস শুরু হওয়ার আগে এবং ক্লাস ছুটির পর এসব বখাটের বিচরণ দেখা যায় বেশি। এরা বিশেষ করে স্কুলগামী ছাত্রীদের নানাভাবে উক্ত্যক্ত করে এবং খুব খারাপভাবে প্রেম নিবেদন করে। অনেক অভিভাবক এসব দেখেও সহ্য করে মেয়েকে সাথে করে স্কুলে আসা-যাওয়া করেন।
এসব বখাটের সাথে ভদ্রবেশী ইভটিজাররাও থাকে। তাদের দেখলে ভদ্র মনে হয়, কিন্তু এই ভদ্রবেশীর আড়ালে তারা মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে থাকে। কোনো সচেতন এবং প্রতিবাদী মানুষ বখাটে ও ইভটিজারদের প্রতিবাদ করলে অথবা বাধা দিলে উল্টো প্রতিবাদকারী রোষানলে পড়েন। এমনকি ওই ভদ্রবেশী বখাটের পক্ষ নিয়ে তার অভিভাবকরাও নির্লজ্জভাবে প্রতিবাদকারী সচেতন মানুষগুলোর ওপর চড়াও হয়, দেখে নেয়ার হুমকি দেয় এবং মিথ্যা অপবাদ দেয়। এসব ভদ্রবেশী ইভটিজার এবং বখাটেদের উপদ্রব থেকে স্কুলগামী মেয়েদের রক্ষা করতে প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা প্রত্যাশা করেছেন নিরীহ অভিভাবকরা।
এবিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ নুর আলম জানান, ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে প্রশাসন সবসময় কঠোর অবস্থানে রয়েছে । স্কুল-কলেজসহ যেসব পয়েন্টে ইভটিজিং এর আশংকা রয়েছে ওখানেই প্রশাসনের লোকজন দায়িত্ব পালন করে। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে তা গুরুত্ব সহকারে দেখা হয় এবং বিষয়ে প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয়দের এগিয়ে আসা দরকার। এছাড়া কিশোর গ্যাং দের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।