ঘটনার সাড়ে তিন মাসেও মামলা নেয়নি দিরাই থানা পুলিশ
সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে ৪নং চন্নারচর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে লৌলারচর গ্রামে পাকা রাস্তার উপরের মাটি ভরাটে অনিয়ম দুর্নীতি ও সরকারী বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের প্রতিবাদ করায় রাস্তা কর্তন ও ব্যবসায়ী মোক্তার হোসেনকে মারপিট করে গুরুতর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করলে ঘটনার সাড়ে তিন মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও মামলা নেয়নি দিরাই থানা পুলিশ। এমনকি সুনামগঞ্জ জেলা ম্যাজিস্ট্রটের অনুরোধকেও পাত্তা দিচ্ছেন না দিরাই থানার ওসি। গত ৩০ জুন সকাল ১০টায় দিরাই থানাধীন লৌলারচর গ্রামের মোক্তার হোসেনের বাড়ির সামনে পাকা রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগে প্রকাশ, লৌলারচর গ্রামের ইউপি মেম্বার যুবলীগ নেতা খোকন কিবরিয়া বিগত আওয়ামী সরকার আমলে রাস্তা মেরামতসহ বিভিন্ন প্রকল্পের নামে বরাদ্দকৃত সরকারের লাখো-কোটি টাকা আত্মসাত করেন। তৎকালীন আওয়ামী এমপি জয়া সেনগুপ্তের মাধ্যমে বরাদ্দ এনে তা আত্মসাত করেন। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পট পরিবর্তনের পর ৪নং চন্নারচর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে জামায়াত নেতা মোক্তার হোসেন যুবলীগের ওই মেম্বারের আত্মসাতমূলক কর্মকাণ্ডের প্রতিকার চেয়ে সরকারের বিভিন্ন দায়িত্বশীল দপ্তরে জনস্বার্থে আবেদন-নিবেদন করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে যুবলীগের ইউপি মেম্বার খোকন কিবরিয়া তার সশস্ত্র দলবল নিয়ে গত ৩০ জুন মোক্তার হোসেনের বাড়ীর সমনে জনচলাচলের রাস্তা কেটে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে। ফলে এর প্রতিবাদ করলে মেম্বার খোকন কিবরিয়া তার দলবল নিয়ে মোক্তার হোসেনের উপর সশস্ত্র হামলা চালান। হামলায় মোক্তার হোসেন গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে লুটে পড়েন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। চিকিৎসা শেষে মোক্তার হোসেন দিরাই থানায় গিয়ে খোকন মেম্বারসহ ১৮ জনকে বিবাদী করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
বিবাদীরা হচ্ছেন-স্থানীয় লৌলারচর গ্রামের আলিপ তালুকদারের পুত্র মুলসিম মিয়া, একইগ্রামের আব্দুল মতিনের পুত্র ইউপি মেম্বার যুবলীগ নেতা খোকন কিবরিয়া, গ্রামের মৃত শুকুর আলীর পুত্র রুহুল আমীন, রুহুল আমিনের পুত্র তফছির আলী ও মাহমুদ আলী, মৃত রিফাত উল্লাহ তালুকদারের পুত্র আব্দুল মতিন, বাবুল মিয়া, আব্দুল মতিন তালুকদারের ছেলে লুবন মিয়া ও মামুন মিয়া, মৃত আছগর আলীর পুত্র আলী আহমদ, মৃত নিমাই উল্লাহর পুত্র উমর ফারুক, মৃত রহমত মিয়ার পুত্র ইউনুছ মিয়া, আলিপ তালুকদারের পুত্র শাহিন তালুকদার, গাজী তালুকদার ও উজ্জল তালুকদার, আছগর আলী তালুকদারের পুত্র হায়িব তালুকদার, রুহুল আমীনের পুত্র সাগর ও আছগর আলী তালুকদারের পুত্র আজি সহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন।
অভিযোগের কপিতে সুনামগঞ্জ জেলা ম্যাজিস্ট্র্রেট ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়ার লিখিত রিকুমেন্ডেশনও রয়েছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ঘটনার সাড়ে ৩ মাসেও মামলাটি রেকর্ডে নেয়নি দিরাই থানা পুলিশ। অবজ্ঞা করে চলেছে একজন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুরোধকেও। তাই বাদী মোক্তার হোসেন উক্ত মামলার বিষয়ে বর্তমান সরকার ও প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
উল্লখ্য, মামলার বিবাদী মুসলিম মিয়া, রুহুল আমীন ও আলী আমজদ বাদীর মামাতো ভাই তাজুল হত্যা মামলায় যাবজ্জীব সাজাপ্রাপ্ত। বর্তমানে উচ্চ আদালতের জামিনে থেকে এ হামলায় অংশ নেয়।