খোয়াই নদীর চর কেটে মাটি বিক্রি -হুমকিতে বাঁধ ও নতুনব্রিজ এলাকা
বালু লুটের পর এবার মাটিকাটার মহোৎসব!
হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লস্করপুর ইউনিয়নের গঙ্গানগর ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নতুনব্রিজ এলাকার খোয়াই নদীর চর কেটে মাটি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে সালেহ আহমেদ ও সুজন নামের দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তাদের এই অবৈধ কর্মকাণ্ডে নদীর বাঁধ, ব্রিজ এবং আশপাশের জনবসতিপূর্ণ এলাকা মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ওই দুই ব্যক্তি প্রশাসনের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিকে ‘ম্যানেজ’ করে রাতের আঁধারে খোয়াই নদীর তীর ঘেঁষে থাকা চর এলাকায় মাটি কাটা শুরু করেছেন। প্রতিদিন রাত ১২টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত ট্রাক ও ডাম্পার দিয়ে ব্যাপকভাবে মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি বাঁধের নিচের অংশে ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি স্থানে নদীতীরের মাটি ধসে পড়তেও দেখা গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বরং মাটি খেকোরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত সালেহ আহমেদ ও সুজন দাবি করেন, তারা গঙ্গানগরের চয়ন নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ওই চর অংশ ক্রয় করেছেন। তাই সেখানে মাটি কাটতে কোনো সমস্যা নেই বলে তারা জানান। তবে পরিবেশবিদ ও সচেতন মহল বলছেন, নদীর চর বা তীরের কোনো অংশ ব্যক্তিমালিকানাধীন হতে পারে না। এটি রাষ্ট্রীয় সম্পদ, যার সংরক্ষণ করা প্রশাসন ও নাগরিক সবার দায়িত্ব। এভাবে নির্বিচারে মাটি কাটলে নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে ভয়াবহ ভাঙন সৃষ্টি হতে পারে, যা স্থানীয় অবকাঠামো ও জনগণের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। এ বিষয়ে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি)-এর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি। স্থানীয়রা দ্রুত অবৈধ মাটি বিক্রির এ কর্মকাণ্ড বন্ধ করে খোয়াই নদী ও বাঁধ রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী বলেন, বর্ষার সময় খোয়াই নদীর পানি বাড়লে আমরা ভীষণ ঝুঁকিতে থাকি। এখন প্রতিনিয়ত ট্রাক ও ট্রাক্টর চলাচলে বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়ছে, অনেক জায়গায় ফেটে যাচ্ছে। বর্ষা এলেই এই বাঁধ আমাদের জীবনের একমাত্র ভরসা হয়ে ওঠে -অথচ এখন কেউ তা রক্ষায় নজর দিচ্ছে না। প্রশাসন এখনই ব্যবস্থা না নিলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।