শাবিতে শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগ

শাবিপ্রবি প্রতিনিধি
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলাকালীন ফোনের রিংটোন বাজাকে কেন্দ্র ধরে এক শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে৷
এসময় ওই শিক্ষার্থীর আত্মীয়কেও ফোনে শাসানো হয় বলে অভিযোগ উঠে।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের ১ম বর্ষ ২য় সেমিস্টারে পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন ইন বাংলাদেশ (পিএসএস-১২২) কোর্সের ফাইনাল পরীক্ষা চলাকালীন এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হলেন ২০২১-২২ সেশনের মো. মিজানুর রহমান। অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. দিলারা রহমান।
ঘটনার বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী ও ফেসবুক পোস্টের সূত্রে জানা যায়, পরীক্ষা চলাকালীন ওই শিক্ষার্থীর (মিজান) ব্যাগে ফোনে রিংটোন বেজে উঠে। তৎক্ষনাৎ ওই ম্যাম কলের বিষয়ে শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞেস করলে তার আম্মু ফোন দিয়েছে বলে জানায়। ম্যামের কাছে এ বিষয়ে ক্ষমাও চায় সে। কিন্তু ম্যাম এসবে পাত্তা না দিয়ে ছেলেটির খাতা কেড়ে নেয়।
ঘটনায় ১৫/২০ মিনিট ধরে ম্যাম ছেলেটিকে ধমকায়। তখন ছেলেটি কান্নারত অবস্থায় ক্ষমাচাইলে ম্যাম কোনো কারণ ছাড়াই আরো বেশি রেগে চড়ে ওঠে। তৎক্ষণাৎ ম্যাম কল আসা নাম্বারে ফোন দেয়। ফোন দিয়ে “কেন আপনি এসময় ফোন করছেন? আপনি কি জানেন না আপনার ছেলে এখন পরীক্ষা দিচ্ছে?” এসব করতে করতে প্রায় ৩০ মিনিট চলে যায়, ক্লাসে পরীক্ষাররত সবাই হতভম্ব হয়ে যায়। এদিকে ছেলেটি কান্নারত যতভাবে সম্ভব ক্ষমা চেয়েই যাচ্ছেন।
এসময় ওই শিক্ষার্থীকে ম্যাম বলে যে, এজন্য তোমাকে ফোন সাইলেন্ট না করে অপরাধ করছে এবং ম্যামের সাথে বেয়াদবি করছে এ স্বীকারোক্তিতে একটা দরখাস্ত লিখতে হবে।
এরপর ম্যাম ফোনে ভিডিও রেকর্ডে ছেলেটার স্টেটমেন্ট নেন। ম্যাম বলেন, “তুমি অপরাধ করছো এবং আমার সাথে বেয়াদবি করছো স্টেটমেন্টে ঠিক এবাবে বলবা।” ছেলেটা বাধ্য হয়ে স্টেটমেন্ট দিল, যা ঠিক এমন ছিল ম্যাম আমি ফোন সাইলেন্ট না করে অপরাধ করছি, এবং আপনার সাথে বেয়াদবি করছি, আমাকে মাফ করে দেন।”
এই পোস্টে আরও উল্লেখ করা হয়, একজন স্যার এবং একজন ম্যাম পরীক্ষার হলে এসে কি হচ্ছে জানতে চাইলে ওই ম্যাম বলেন, “এই ছেলে পরীক্ষা হলে ফোন সাইলেন্ট করে নাই, ফোনে বার বার রিং বেজে উঠে। তাকে যখন জিজ্ঞেস করি কে ফোন দিছে, কেন ফোনে রিংটোন বাজল? ছেলেটা আমার দিকে এমনভাবে তাকাচ্ছিল যেন আমাকে ‘খেয়ে’ ফেলবে, আমাকে ‘রেপ’ করবে, এই ছেলেতো আমাকে ‘রেপ’ করতে চাচ্ছে।
প্রতক্ষ্যদর্শী ভাষ্য অনুযায়ী ওই শিক্ষক পরীক্ষারত সবার উপর ক্ষোভ জেরে আরো বলেন, ” আপনাদের কে আমি দেখে নিব, যান যান গিয়ে বড় বড় স্ট্যাটাস দেন ফেসবুকে, মনে রাখবেন এবারও আপনাদের খাতা আমার হাতে আসবে, কয়জনে পাশ করতে পারেন দেখে নিবো।”
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মিজানুর রহমানের ফোন কল দিলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক অধ্যাপক দিলারা রহমান বলেন, ” আমি এ বিষয়ে ওভার দ্যা ফোনে কথা বলতে চায় না। আর এ বিষয়ে কিছুই জানি না।”